কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। রাজধানীর কোনো কোনো এলাকা পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রামপুরা-বাড্ডা-মালিবাগ এলাকা।
গত ১৮, ১৯ ও ২০ জুলাই কোটা আন্দোলন চলাকালে দুর্বৃত্তদের নারকীয় তাণ্ডবের শিকার হয়েছিল বিটিভি ভবন, ওয়াসার পাম্প হাউজ, রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন পুলিশ বক্সসহ বেশ কয়েকটি ভবন। এ ছাড়া রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। ভাঙচুর ও আগুনে পুড়েছে সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য গাড়ি।
আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’র সুযোগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন দেওয়ার পাশাপাশি চালিয়েছে লুটপাটও। শুধু তাই নয়, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে আসতে দেওয়া হয়নি। ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি পুড়ে গেছে, যার কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিটিভির সম্প্রচার। তবে ভবনের ভেতরে আটকা পড়া কর্মচারী-কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা পুলিশ ও বিজিবির সহযোগিতায় দীর্ঘক্ষণ পরে নিরাপদে বের হয়ে আসেন।
আন্দোলনের ওই তিনদিনে রামপুরা-বাড্ডা-মালিবাগ এলাকার মূল সড়ক ও গলির মুখে দুর্বৃত্তরা গাছ, বিদ্যুতের পিলার ও ডিভাইডার ফেলে সাধারণের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। তারা রাস্তায় স্থাপন করা সব সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যায়। রাস্তায় থাকা লোহার ডিভাইডারও ভেঙে নিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। এ ছাড়া ভাঙচুর করা হয় রাস্তার আশপাশের দোকানও। এমনকি ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের পরের দিন শনিবারও রামপুরা এলাকায় সহিংসতা হয়।
কয়েকদিন ধরে চলমান কারফিউতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় কোটা আন্দোলনের সময় চলা তাণ্ডবের চিহ্ন এখনো রয়ে গেছে।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা থেকে নতুন বাজার এলাকা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশের বেশ কয়েকটি দোকানও ভাঙচুর করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কোটা আন্দোলন চলাকালে এক শ্রেণির উঠতি বয়সের তরুণরা ভাঙচুর চালিয়ে, যারা আসলে শিক্ষার্থী নয়।
রামপুরা-বাড্ডা-মালিবাগ এলাকার সহিংসতার ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি। এসব এলাকার সাধারণ মানুষ ও দোকানিরা এখনো আতঙ্কিত। যে কারণে কারফিউ শিথিলের সময়ও প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে।