কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’—এ প্রবাদ শতভাগ খাটত ক্রীড়া পরিদপ্তরের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ ইস্যুতে। প্রতি বছর এ খাতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ থাকছে; কিন্তু বাস্তবে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রীড়া সামগ্রী গিয়ে পৌঁছাচ্ছে না। নীতিমালা বদলালেও সে ধারার কি আদৌ পরিবর্তন হবে!
জাতীয় ক্রীড়া পরিদপ্তরের ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয় ও বিতরণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়ে থাকে বটে; কিন্তু সেটা নির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দরপত্রে অংশগ্রহণ করা সিন্ডিকেট, ক্রীড়া পরিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে সব হতো—জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। সম্প্রতি ক্রীড়া সামগ্রীর দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলেন এক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। নিজের অভিজ্ঞতার কথা এভাবে জানালেন ওই ব্যবসায়ী, ‘আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে সাধারণত পুকুর চুরি হয়; কিন্তু ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ ইস্যুতে রীতিমতো সাগর চুরি হচ্ছে! অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রীড়া সামগ্রী শুধু কাগজ-কলমেই, বাস্তবে যার অস্তিত্ব নেই। তৃণমূলের বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থা ক্রীড়া সামগ্রী নিতে এলে তাদের অর্থ দিয়ে দেওয়া হতো। বরাদ্দকৃত অর্থের কিছু অংশে নামসর্বস্ব ক্রীড়া সামগ্রী কেনা হয় বটে, কিন্তু সেগুলো মানহীন।’ প্রশ্ন হচ্ছে, নীতিমালা পরিবর্তন করে কি ‘সাগর চুরি’ বন্ধ করা যাবে!
একটা বিষয় পরিষ্কার—নতুন নীতিমালায় ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণে রাজনৈতিক প্রভাব কমছে। ২০১৬ সালে প্রণয়ন করা পুরোনো নীতিমালায় ক্রীড়া সামগ্রীর ওপর ৬৫ শতাংশ কর্তৃত্ব ছিল সংসদ সদস্যদের। ক্রীড়া পরিদপ্তরের ২০ শতাংশ এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাকি ১৫ শতাংশ বিতরণের এখতিয়ার ছিল জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাদের। নতুন নীতিমালায় জেলা সদর এবং উপজেলা কমিটিগুলোর মাধ্যমে বিতরণের জন্য ক্রীড়া কর্মকর্তাদের অনুকূলে থাকবে ৭০ শতাংশ। ২০ শতাংশ বহাল রাখা হয়েছে ক্রীড়া পরিদপ্তরের। বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ও নানা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিতরণের জন্য বরাদ্দ থাকবে বাকি ১০ শতাংশ।