করোনাকালে ঘরবন্দি শিশুরা যখন স্মার্টফোন ও ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়েছিল তখন শিশুদের সৃজনশীলতায় উৎসাহিত করতে কারুপীঠ নামের শিক্ষায়তন ও হাতপুতুল বানানোর প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন ইশিতা জাহাঙ্গীর। কারুপীঠের মতো এসএমই মেলায় তিন শতাধিক উদ্যোক্তা অংশ নেন। যার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তা।
এবারের এই মেলায় পণ্যের মূল্য বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। অন্যদিকে উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে এবার পণ্যের দাম বাড়তি। উদ্যোক্তারা জানান, পণ্যের বাজারমূল্য ও শৈল্পিকমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারমূল্য থেকে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন উদ্যোক্তারা।
কল্যাণপুর থেকে আসা গৃহিনী নাসিমা আমির বলেন, স্টলগুলো ঘুরে দেখলাম। মেয়েদের থ্রি পিছ, জামা এসব পণ্যের দাম বেশিই মনে হচ্ছে। মেলা উপলক্ষে আরও ছাড় দেওয়া প্রয়োজন ছিল।
ক্রাফটস পণ্য বিক্রি করা উদ্যোক্তা শায়লা বলেন, প্রত্যেকটা কাচামালের দাম চড়া। বেতন ভাতা ও বেড়েছে শ্রমিকদের। বলা যায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। মেলায় স্বল্প মুনাফায় পণ্য বিক্রি করছি।
রোববার (১৯ মে) প্রধানমন্ত্রী আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এসএমই মেলার উদ্বোধন করেন। মেলায় উদ্যোক্তারা প্রদর্শন করছেন হাতে তৈরি খাবার, হস্ত ও কারুশিল্পসহ নানান পণ্য।
নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাকরি ও গৃহস্থলী কাজের পাশাপাশি অনেকেই মনোযোগ দিয়েছেন ব্যবসা বাণিজ্যে। আবার অনেকেই উদ্যোক্তা হলে ছেড়েছেন চাকরি। তেমনি একজন ইশিতা জাহাঙ্গীর। ২০২১ সালে শিক্ষকতা ছেড়ে কারুপীঠ শুরু করেন ইশিতা জাহাঙ্গীর। পাপেট থিয়েটারে পাপেট এ শিল্পী জানান, তার শিক্ষায়তনে ৮০ জনের বেশি শিশু আছে। পাশাপাশি তৈরি করা পুতুল বিক্রি ও প্রদর্শন করছেন।
আমার নাম ভোলা, আমি যেকোন কাজ করতে গিয়ে ভুলে যাই। আর সামনে যা আসে তা নিয়ে একটু দুষ্টুমি করি। আমার আরেকটি বান্ধবী আছে, ওর নাম ইচিং।’ ভোলা, ইচিং এর মতো বাঘ, বিড়াল কিংবা ইদুর অবয়বের হাতপুতুল তার স্টলে শিশুদের খেলা দেখাচ্ছিলেন পাপেটিয়ার ইশিতা জাহাঙ্গীর।
তিনি বলেন, কোভিডকালীন সময়ে শিশুরা ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে বাচ্চারা এখনও বের হতে পারেনি। আমার লক্ষ্য শিশুদের খেলামুখী করা, সৃজনশীল করা। শিশুরা কারুপীঠে এসে খেলে ও ছবি আঁকে। শিক্ষা ব্যববস্থায় এ ধরনের ক্রাফটিং, হাত পুতুলের মধ্যে শিখন ব্যবস্থা শিগগির চলে আসবে। প্রতিটি জিনিস আমাদের হাতে তৈরি, এগুলোর শৈল্পিক মূল্য আছে। কিন্তু এ
একই অভিযোগ জানালেন সূচিঁশিল্পী ইলোয়ারা পারভীন। তিনি সুই সুতা দিয়ে হাতে সেলাই করে আকেন বিভিন্ন রকম ছবি, মানুষের মুখ। তার সেলাইয়ে জীবন্ত হয়ে ধরা দেয় চিত্রশিল্পী এস এম সুলতাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকেই।
নড়াইলের এ শিল্পী বলেন, দীর্ঘ ২ যুগ ধরে সুই সুতার কাজ করছি। সাধনা করে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করছি। প্রথমে ছবি দেখে একটা আউটলাইন করি। তারপর সেই ছবি দেখে আমি হাতে সেলাই করি।