মিয়া আবদুল হান্নান : সিজদার সময় সাতটি অঙ্গ মাটিতে লাগানো বা সাতটি অঙ্গের ওপর সিজদা করা ওয়াজিব; অঙ্গগুলো হলো, চেহারা, দুই হাত, দুই হাঁটু ও দুই পায়ের আঙ্গুল। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
আমাকে সাতটি অঙ্গের ওপর সিজদা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কপাল, (এবং তিনি হাত দিয়ে নাকের দিকে ইশরা করে নাককেও এর অন্তর্ভুক্ত করেন,) আর দুই হাত, দুই হাঁটু, দুই পায়ের আঙ্গুলসমূহ। আর আমরা যেন চুল ও কাপড় না গুটাই। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায় সিজদার সময় কপাল ও নাক মাটিতে লাগাতে হবে। সাধারণ অবস্থায় টুপি বা পাগড়ির প্যাচের ওপর সিজদা করাও মাকরুহ। তবে প্রচন্ড রোদের কারণে মেঝে বা রাস্তা উত্তপ্ত হয়ে থাকলে যদি জমিনে কপাল ঠেকানো কষ্টকর হয়, তাহলে পাগড়ি বা টুপির একাংশ কপালের উপর টেনে নিয়ে তার ওপর সিজদা করা যাবে। এতে নামায মাকরুহ হবে না। সাহাবায়ে কেরামও অনেক সময় প্রচন্ড শীত বা গরমে সরাসরি মাটিতে সিজদা করতে কষ্ট হওয়ার কারণে পাগড়ির পেঁচের ওপর সিজদা করেছেন বলে বর্ণিত রয়েছে।
বিশেষ ওজর ছাড়া টুপি বা পাগড়ির ওপর সিজদা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হাদিসে এসেছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ব্যক্তিকে পাগড়ির উপর সিজদা করতে দেখে তার কপালের দিকে ইশারা করে বলেন, তোমার পাগড়ি আরো ওঠাও। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/৫০০)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকেও বর্ণিত আছে যে, তিনি পাগড়ির উপর সিজদা করা অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ২/৫০০)
কেউ যদি সিজদার সময় জমিনে শুধু মাথা রাখে অর্থাৎ চুলের অংশ জমিনে রাখে কপালের কোনো অংশই জমিনে না লাগে তবে তার সিজদা আদায় হবে না। তাই তার নামাজও হবে না। কারণ সিজদার অঙ্গ কপাল, মাথা নয়।
সিজদা নামাজের অন্যতম ফরজ বা রোকন। সিজদা যথাযথভাবে আদায় করা ছাড়া নামাজ হবে না। তাই সিজদা যথাযথভাবে আদায়ের প্রতি যত্নবান হওয়া আমাদের কর্তব্য।